Monday, May 30, 2011

আকাশের ক্ষুদ্রতার গল্প।


এটি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার অরুনখোলা গ্রামের গল্প।
কিছু দিনমজুর, রিক্সাচালক এবং রাবার বাগানের কর্মীরা কীভাবে আকাশকে লজ্জা দিল সেই গল্প!


৭০০০ লোকের উপজেলাটিতে মাত্র ২ টি স্কুল। বাচ্চাদের ৪/৫ মাইল দূরের স্কুলে যেতে হয়
কর্দমাক্ত পথ,নদী পেরিয়ে। ছোট শিশুদের জন্য প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার।

ফারুক হোসেন, ৩০ বছরের তরুণ। যাঁর দৈনিক আয় ছিলো সর্বোচ্চ ২০০ টাকা। অরুনখোলা
গ্রামে একটি স্কুল স্থাপনের স্বপ্ন দেখেন। তিনি তাঁর স্বপ্নের কথা অন্য শ্রমিকদের সাথে শেয়ার করেন। বাকিরা
রাজি হয়ে যান!!
আমাদের গল্প, রূপকথায় পরিণত হয়!





সেই 'দিনমজুর'রা বাড়ি বাড়ি ঘুরে ১৫০ জন ছাত্র ছাত্রী যোগাড় করেন। আমজাদ হোসেন নামের একজন
মজুর তাঁর বাড়ির একাংশ দেন স্কুলের জন্য।
নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়া ফারুক হন স্কুলের প্রধান শিক্ষক! আরও ৩ জন হন শিক্ষক। (যার যা
কিছু আছে তাই নিয়েই তো যুদ্ধে ঝাঁপাতে হয়!!)

এভাবে গল্প গড়াতে থাকে। রূপকথার পক্ষিরাজ উড়তে থাকে।

সেই সব মজুর, রিকশাওয়ালাদের স্বপ্নে শরিক হন আরও ৭ জন গ্রামবাসী! তাঁরা স্কুলের জন্য জায়গা
দান করেন! ৭০০০০ টাকা ধার করা হয় স্কুলটি গড়তে! (পরে তাঁরা সবটা পরিশোধও করেন! )

স্কুলে এসে ছাত্রছাত্রীরা বিনা বেতনে তো পড়েই, সাথে সাথে পায় কলম,খাতা এবং স্কুল ড্রেস
এভাবে স্কুলটি বড় হয়, ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

এই অদ্ভুদ সুন্দর গল্পটিতে আরও অনেকে জড়িত হবার সুন্দরতম লোভে এগিয়ে আসেন, এনজিও, শিক্ষক,চেয়ারম্যান, সবাই!

স্বপ্নের সুবাস ছড়িয়ে পড়ে মধুপুরের সব প্রান্তে।

এই রকম স্বাপ্নিকদের নিয়ে ডেইলি স্টার আজ লিড নিউজ করেছে!
মধুপুরের সেই স্বপ্নের সুবাস ছড়াবে পুরো দেশে!
যা দারুণ রকমের ইতিবাচক।
নেতিবাচক খবর পড়তে পড়তে আমরা স্বপ্ন দেখতে ভুলে যাচ্ছি।

গালিগালাজ করাটা স্মার্টনেস এর পরিচয় হয়ে পড়েছে! নাম বিকৃতি হচ্ছে বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক!
ইতিবাচক কথা মাত্রই "ক্ষ্যাত"।

জয়নুল আবেদীন নামের রিকশাওয়ালার ওরফে আধুনিক পক্ষিরাজ এর গল্পও আমরা শুনেছি। 
শুনছি। 
আরও শুনতে চাই। 

আমরা হৃদয়ের গভীর থেকে বিশ্বাস করি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে না।
সব কিছু এখনো ভেঙে পড়ে নি।

অন্যায়ভাবে এক পা হারানো লিমন পাচ্ছেন হাজারো পা!
রিকশাচালক জয়নুল স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বুয়েট মেডিক্যাল এর ছাত্র ছাত্রীদের
ডাক্তার ইব্রাহিম এর স্বপ্নের সুবাস বগুড়া থেকে এখন সিঙ্গাপুরেও পৌঁছে গেছে!


ফারুক হোসেন নামের দিনমজুর আকাশকে তার ক্ষুদ্রতার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন! 

এভাবেই তো স্বপ্নের সুবাস ছড়ায়!

ছবি ও খবর The Daily Star.



3 comments:

shuvo said...

bappi valo laglo pore... sotti khoborer kagoj e kharap songbad porte porte khoborer kagoj r portei icca kore na....
e rokom valo kichu porle monta valo hoie jai....
nice work... keep it up

Kaniz Fatima Chhanda said...

অসাধারণ বললেও কম সম্মান করা হয়ে যাবে ফারুক হোসেনের এই প্রচেষ্টাকে...এ নষ্ট শহরে ফারুক হোসেনের মুক্ত আকাশ ইট-কাঠ-সিমেন্ট পেরিয়ে সন্ধান দিক এক খোলা প্রান্তরের...আমরা বেঁচে উঠি জীর্ণ আত্মার খোলস ছেড়ে...আর তোমার মত আরো কিছু মানুষ আমাদের বাঁচবার, স্বপ্ন দেখবার আরো আরো সুযোগ করে দিক তাদের স্বপ্নমাখা হাতের গাঁথুনিতে...শুভকামনা......

সাহিত্যকুঞ্জ said...

বুঝতে পারছিনা কী বলব!ফারুক হোসেনের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা!